অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর হাতে তুলে দেওয়া হল দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মিঠুনে্র হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন অফ সাদা রঙের পাঞ্জাবি ও ধুতি পরেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী । পুরস্কার পেয়ে মিঠুন যুবসমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি যদি পারি, তাহলে তোমরা অবশ্যই পারবে।
সেই লম্বা-রোগাটে ছেলেটি চরাই-উতরাই পেরিয়ে ছুটেছেন অনেকটা পথ। এই গতিময়তাই যেমন তাঁকে চূড়ান্ত পেশাদার সাফল্য এনে দিয়েছে, তেমনই বারবার বাঁক বদল করিয়েছেন তিনি। কুলি থেকে এমএলএ ফাটাকেষ্ট। গাঢ় লাল থেকে সবুজ হয়ে মহাগুরু এখন রাজনৈতিক রণবীর রণভূমিতে পদার্পণ। এখনও সচল তিনি।তাঁর জীবনে কত ডার্ক, কত ধরণের উঁচু-নিচু, কত তিক্ততা, স্বেচ্ছানির্বাসন।
তীব্র লড়াই , সে লড়াই পৌঁছে দিয়েছিল পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউট। ধৈর্য্য তিনি ধরতে জানেন কিন্তু বাঙালিকে গাল পাড়লেন এক সিনিয়র, মিঠুন বললেন, “অনেকক্ষণ ধরে সহ্য করেছি। বাঙালি নিয়ে, আর একটা কথা বললে, মেরে মুখ ফাটিয়ে দেব”। অনেকে বলেন, এটাই মিঠুন চক্রবর্তী। চির প্রতিবাদী।বয়স সত্তরের কোঠায়। অভিনয় জীবনে তাঁর সাফল্য প্রশ্নাতীত। সামাজিক কাজেও বারবার এগিয়ে এসেছেন মিঠুন। এসবের পাশাপাশি, রাজনৈতিক কারণে আলোচনায় রয়েছিলেন বাঙালিবাবু।
মৃণাল সেনের মৃগয়া (১৯৭৬) দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মিঠুন। মৃগয়ার জন্য তিনি সেরা অভিনেতা বিভাগে তাঁর প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। দেশের মধ্যে ছাড়াও বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় মৃগয়া। ১৯৮২ সালে ডিস্কো ড্যান্সার মুক্তি পাওয়ার পর মিঠুনকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
তাঁর অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলি হল – ‘অগ্নিপথ’, ‘মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে’, ‘হাম সে হ্যায় জামানা’, ‘পসন্দ আপনি আপনি’, ‘ঘর এক মন্দির’ এবং ‘কসম পাইদা করনে ওয়ালে কি’। সম্প্রতি ‘ওএমজি: ওহ মাই গড’-এর মতো ছবিতে দেখা গিয়েছে মিঠুন চক্রবর্তী। এশিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন, পূর্ব ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক এবং আফ্রিকায় ভালো ব্যবসা করেছিল এই সিনেমা।
পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হওয়ার কয়েক মাস পরেই মিঠুন চক্রবর্তীর দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পাচ্ছেন। চলতি বছর এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছ থেকে পদ্মভূষণ গ্রহণ করেছিলেন মিঠুন। সেই সময় মিঠুন জানিয়েছিলেন, আমি খুব খুশি। আমি জীবনে কখনো কারও কাছে নিজের জন্য কিছু চাইনি। যখন আমায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে ফোন করে জানানো হল, আমাকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে, আমি এক মিনিটের জন্য নীরব ছিলাম। এটা অবিশ্বাস্য, আমি ভাবতেও পারিনি।