গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি গ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৩ তম জন্মতিথিতে মহবারুনীর স্নান উৎসবএবং তিন দিনব্যাপী মেলা। এটি মতুয়া সম্প্রদায় ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ উৎসব। শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৭টা ২১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া স্নান চলছিলো রবিবার ভোররাত পর্যন্ত। পাপ থেকে মুক্তি ও পুণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীরা অংশ নেন। গত শুক্রবার থেকেই লাখ লাখ ভক্তের সমাগমে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৩ তম জন্মতিথি স্নানোৎসব ও মহাবারুনীর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় স্নানোৎসব ও মেলা। অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ স্নানোৎসব ও মেলা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে ছিলো। এ স্নান উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে ঠাকুরবাড়ি এলাকায় উঁচু পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া মিশন ও মহা সংঘের শত শত স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক দায়িত্ব পালন করে ছিলেন। লাখ লাখ মঁতুয়া ভক্তের আগমনে স্নানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। এ উপলক্ষে ঠাকুরবাড়ির আশপাশে বসে মহাবারুনী মেলা। মেলায় কুটিরশিল্প সামগ্রী, বিভিন্ন খেলনা, মাটির জিনিস, বাঁশের জিনিস, খাদ্যসামগ্রী, নাগরদোলনাসহ শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিলো ব্যাপক আয়োজন। কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর জানিয়েছেন, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মঁতুয়া ভক্তরা এ স্নানোৎসবে যোগ দিয়েছেন। তারা হাতে বিজয় ও সত্যের লাল নিশান এবং ডংকা বাজিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে মাইলের পর মাইল পথ পায়ে হেঁটে ছুটে আসেন তীর্থভূমি শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে। দূরের ভক্তরা বাস, ট্রাক, নসিমন, করিমন, ইজি বাইক, থ্রি-হুইলার ও নৌপথে নৌকা ও ট্রলারে এখানে আসেন। ভক্তরা প্রথমে কামনা ও পরে শান্তিসাগরে স্নান করেন।
পবিত্র স্নান উৎসবে যোগ দিতে ভক্তরা জাতীয় পতাকা, শান্তির প্রতীক লাল-সাদা কাপড়ের নিশান উড়িয়ে ঢাকঢোল আর কাঁসরের বাজনার তালে হরিবল উচ্চারণে পুরো এলাকা মাতিয়ে তোলেন।এ সময় হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মন্দিরে পূজা-অর্চনা শেষে ঠাকুরবাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে স্নান করে ঠাকুরের কাছে পাপ থেকে মুক্তি, পুণ্য লাভ এবং দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থনা করা হয়।