সুন্দরবনের জ্বলতে থাকা আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। অগ্নিকান্ড এলাকাকে আগামী ২থেকে ৩দিন বিশেষ পর্যবেক্ষনে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে কাজ করা সকল বাহিনী ও টিম আবারও মাটির ভিতরের আগুন খুজে নেভানোর কাজ করবে। গত শনিবার দুপুরের দিকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ চাদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় লাগা আগুন নেভাতে রবিবার সকাল থেকে বনবিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোষ্টগার্ড, র্যাব-পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করে এ আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। রবিবার বিকেলে আমুরবুনিয়া এলাকায় সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তিনি কয়েক কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখেছেন । তিনি বনের উপরের বেডের কোথাও আগুন জ্বলতে বা আগুনের শিখা দেখেননি। মাটির নিচের স্তরে কোথাও আগুন রয়েছে কিনা সেই আশংকা থেকেই রাতের বেলায় পর্যবেক্ষনের জন্য বন বিভাগের কর্মীদের দিয়ে ২০সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সিডর ও আইলার পর ওই এলাকায় মাটির বেড উচু হয়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় পানি আসে না। সে কারনে ওই স্তানে আগুন লাগলে নেভানো অনেক কষ্টসাধ্য। আগুনে ৪থেকে ৫একর এলাকায় ছড়িয়েছিল। সে কারনে আগুনের ঘটনার স্থান থেকে ৫একর এলাকায় ফায়ার লাইন করা হয়েছে। পরে সেখানে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের পাম্প দিয়ে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ কিনা তদন্ত করে মূল কারন নির্ধারণের প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে দশটায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস ব্রিপিং করেন।
প্রধান বন সংরক্ষক আগুনের বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য সোমবার খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোকে প্রধান করে শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করার ঘোষনা দেন।
প্রেস ব্রিপিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহাম্মদ মহসীন, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম, নলিয়ান রেঞ্জের এসিএফ মো: হাসানুর রহমান, সদর রেঞ্জের এসিএফ একেএম হাসানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গতরবিবার (৫ মে) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার জানান, সুন্দরবনে লাগা আগুন নেভাতে ভোর ছয়টা থেকে ৬টি ফায়ার পাম্প চালু করা হয়। পাম্পগুলো বসানো হয় নৌকায়। আগুন যেন ছড়িয়ে না যায় সেজন্য আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পানির উৎস চিল ভোলা ও শেওলা নদী। ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ও কর্মচারীসহ মোট ৫৫ জন এ কাজে অংশ নেন। এছাড়াও প্রায় ২৫০ জন ভলান্টিয়ার অগ্নি-নির্বাপণ কাজ করেন।